মোঃমহাজামিল,রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি
শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রাজশাহী বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগারে আয়োজিত হলো এক অনুপ্রেরণামূলক আলোচনা সভা। এ আয়োজনে ভাষা আন্দোলনের গৌরবময় ইতিহাস ও শুদ্ধ বাংলা চর্চার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের প্রাঙ্গণে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের মধ্য দিয়ে কর্মসূচির সূচনা হয়। এরপর সকাল সাড়ে ৯টায় রাজশাহী বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগারের উদ্যোগে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাজশাহীর সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ (অব.) মো. আব্দুস সামাদ মণ্ডল। তিনি বলেন, “ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার পেয়েছি। তবে, শুদ্ধ বাংলা চর্চা নিশ্চিত করতে না পারলে সেই আত্মত্যাগের প্রকৃত সম্মান দেওয়া হবে না।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী আশেকুন নবী, রাজশাহীর শিশু পল্লীর সহকারী পরিচালক নাজমুল হোসেন এবং গণগ্রন্থাগারের সহকারী লাইব্রেরিয়ান শিলা খাতুন। তাঁরা ভাষার গুরুত্ব, বাংলা ভাষার বর্তমান চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়ে তাঁদের মতামত তুলে ধরেন।
আলোচকরা বলেন, প্রযুক্তির প্রসার ও বিদেশি ভাষার আগ্রাসনের ফলে অনেকেই শুদ্ধ বাংলা ব্যবহারে উদাসীন হয়ে পড়ছেন। বক্তারা বাংলা ভাষার সঠিক উচ্চারণ ও ব্যাকরণগত বিশুদ্ধতা বজায় রাখার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগারের সহকারী পরিচালক মো. রোকনুজ্জামান। তিনি বলেন, “ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বাংলা ভাষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল করতে হবে। কেবল ভাষার প্রতি ভালোবাসাই নয়, এর সঠিক প্রয়োগও নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব।”
আলোচনা সভায় পাঠক-পাঠিকা, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও বিভিন্ন পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়, তখন পুরো হলরুম জুড়ে নেমে আসে এক আবেগঘন নীরবতা।
এই আয়োজন আবারও মনে করিয়ে দিল, শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস শুধু উদযাপনের জন্য নয়, বরং মাতৃভাষার প্রতি ভালোবাসা ও যত্ন নেওয়ার অঙ্গীকার নবায়নের দিন।