মনপুরা উপজেলা প্রতিনিধি,,,ভোলার মনপুরা উপজেলার ৪ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গাছে গাছে পেরেক ও তারকাঁটা ঠুকিয়ে সাঁটানো হয়েছে ব্যানার, ফেস্টুনসহ নানা ধরনের প্রচারণা। মনপুরার প্রধানসড়কের পাশে বেড়ে উঠা গাছগুলো মানুষের অকৃত্রিম বন্ধু হলেও অসচেতনতায় চরম নিষ্ঠুরতার শিকার হচ্ছে। এভাবে গাছে গাছে পেরেক ঠুকিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও প্রতিষ্ঠানের ব্যানার ফেস্টুন দিয়ে প্রচারণা দিন দিন বেড়েই চলছে। গাছে গাছে এসব ফেস্টুন সাঁটানোর কারণে নষ্ট হচ্ছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।
মনপুরার হাজীরহাট ইউনিয়ন এর উপজেলা প্রশাসক এর নাকের ডগার সড়কসহ প্রতিটি সড়কের দু’পাশের শত শত গাছের এখন বেহাল দশা। এ গাছগুলো এখন প্রচারমূলক কাজের মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে। বিভিন্ন ব্যক্তির প্রচারমূলক ব্যানার, ফেস্টুন, কোচিং সেন্টার ও প্রাইভেট স্কুলে ছাত্রভর্তি, চিকিৎসা সেবা, বাসা ভাড়া, হারবাল ওষুধ বিক্রি, টু-লেটসহ নানা ধরণের প্রচার-প্রচারণার ক্ষেত্র উপজেলার এই দৃষ্টিনন্দন এই গাছগুলো।
শুধুমাত্র উপজেলা ২ নং হাজীরহাট এলাকাতেই নয়, উপজেলার বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, হাট, বাজারগুলোতেও একই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। হাজিরহাট এলাকার দোকানগুলোতে গ্রামীণফোন, বাংলালিংক ও ব্যবসায়ীক সংশ্লিষ্ট কিছু ব্যানার ফেস্টুন টানানো হয়েছে। কোন অনুমতি না নিয়ে গাছে গাছে পেরেক ঠুকিয়ে ব্যানার ফেস্টুন সাঁটানো হয়েছে। যদিও উপজেলা প্রশাসন কর্তৃপক্ষ ব্যানার সাঁটানোর বিরুদ্ধে নেওয়া হয়েছে পদক্ষেপ। শুরু হয়নি এখনো কার্যক্রম।
পরিবেশবিদদের মতে, পেরেক লাগানোর কারণে গাছের গায়ে যে ছিদ্র হয়, তা দিয়ে পানি ও এর সঙ্গে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া-অণুজীব ঢোকে। এতে গাছের ওই জায়গায় দ্রুত পচন ধরে। গাছের খাদ্য ও পানি শোষণপ্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। এতে গাছ মারাও যেতে পারে। এছাড়া স-মিলে ওইসব পেরক, কাঁটা ঠুকানো গাছের গুডি কাঠ করার জন্য ফাড়া হয় তখন স- মিলের ব্যপক ক্ষতি হয়, ভিতর পচে যাওয়ার ফলে কাঠও কম হয়। অনেক ক্ষেত্রে কাঠ না হয়ে জ্বালানী খড়ি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
এ বিষয়ে ফার্নিচার ব্যবসায়ী আবদুর রহিম বলেন, রাস্তার পাশে বা হাট-বাজারের গাছে পেরেক ঠুকানো থাকে তাই এসব গাছ ছিড়াই করতে গেলে আমাদের সমস্যা হয়। করাত ভেঙে যায়। এসব গাছের কাঠের গুনগতমান নষ্ট হয়। ফলে ফার্নিচার বানালে টেকসই কম হয়।
মনপুরা বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা জানান , আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য গাছের পরিচর্যা করা দরকার। আবার যে গাছগুলো আছে বা লাগানো হচ্ছে তাতে লোহা দিয়ে ফেস্টুন, সাইনবোর্ড লাগানো হচ্ছে। এই লোহা ঠুকানোর ফলে গাছের আঠা ঝরে সতেজ বাকল নষ্ট হয় ফলে গাছ মারা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।তিনি আরও বলেন মানুষের যেমন জীবন আছে তদরুপ গাছেরও জীবন আছে। গাছে পেরেক লাগানোর ফলে গাছকে ভালো ভাবে বেড়ে উঠতে বাধা দেয়। মনপুরাতে অধিকাংশই রাজনৈতিক ব্যানার গুলো বেশি টানানো হয় গাছে। আমরা গত দু’মাস আগে রাজনৈতিক নেতাদের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলেছিলাম এখন তারা যদি গাছে বেনা লাগানোর ব্যাপার একটু সতর্ক হয় তাহলে আমি মনে করি ভালো হয়। এ জন্য তিনি গাছে পেরেক না ঠুকাতে জনগণকে সচেতন থাকা ও রাখার জন্য অনুরোধ করেন।
মনপুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা( ইউএনও) লিখন বনিক বলেন, মনপুরা বন বিভাগকে যৌথভাবে কাজেলাগিয়ে গাছের পেরেক তোলার উদ্যোগ নিয়েছি কিছুদিনের মধ্যে গাছের সকল পেরেক তুলে ফেলা হবে।