ছাতক, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে চলমান রাস্তার কাজ শেষ হওয়ার আগেই হাতের টানে উঠে যাচ্ছে রাস্তার পিচ ঢালাই। ফলে কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
উপজেলার পান্ডারগাঁও ইউনিয়ন থেকে ছাতক উপজেলার বড়কাপন পর্যন্ত আট কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও কাজের তদারকিতে থাকা এলজিইডি অফিসের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ছাতক ও দোয়ারাবাজার এই দু’উপজেলার মানুষের চলাচলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকার পর সম্প্রতি সংস্কার কাজ শুরু হয়। দোয়ারাবাজার উপজেলার পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের দোয়ারাবাজার ভায়া পান্ডারগাঁও-শ্রীপুরবাজার থেকে ছাতক উপজেলার বড়কাপন ভায়া কপলা বাজার পর্যন্ত আট কিলোমিটার এই সড়ক সংস্কারে ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ কোটি ৯২ লাখ টাকা। কাজে নিয়োজিত মেসার্স সালেহ অ্যান্ড ব্রাদার্স নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এলজিইডির যথাযথ তদারকি না থাকায় এবং সংস্কার কাজের শুরুতেই বালু, পাথর, বিটুমিনসহ নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় কাজ শেষ হওয়ার আগেই সড়কের কয়েকটি অংশের পিচ ঢালাই উঠে যাচ্ছে। এছাড়াও রাস্তার ব্লক, গাইডওয়াল নির্মাণেও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। এতে পিচ ঢালাইয়ের পূর্বেই গার্ডওয়াল এবং ব্লকগুলোতে ফাটল এবং অনেক জায়গায় ভেঙে গেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, এলজিইডি অফিসকে রাস্তার সংস্কার কাজের অনিয়ম ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের বিষয়ে বার বার অবহিত করা হলেও তারা এসব অভিযোগ আমলে নিচ্ছেন না। দায়সারা ভাবে তদারকি করে চলে যাচ্ছেন।
উপজেলার পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের বাসিন্দা শিক্ষক কামাল উদ্দিন বলেন, ‘সড়কের কয়েকটি অংশের পিচ ঢালাই উঠে গেছে। চলমান সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।’
ব্যবসায়ী মো. আজাদ গনি জানান, ‘ঠিকাদারের লোকজন ময়লা-আর্বজনা পরিষ্কার না করেই কাজ করেছেন। কমপ্রেশার মেশিন দিয়ে সড়ক পরিষ্কার করে পিচ ঢালাই দেওয়ার কথা। কিন্তু তা না করে গাছের পাতা ও ময়লার ওপরই পিচ দিয়েছেন এবং তা এখনো চলমান রয়েছে । নিয়ম অনুযায়ী এক ইঞ্চি ঢালাই হওয়ার কথা থাকলেও যে সব জায়গার পিচ উঠে গেছে সেখানে এক ইঞ্চি না দিয়ে হাফ ইঞ্চি পিচ ঢালাই দেওয়া হয়েছে।’
জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ফয়সল আহমদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘কিছু জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে এবং পিচ উঠে গেছে। এগুলো আমরা দ্রুত রিপিয়ারিং করে দেব।’
এলজিইডি অফিসের দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ বলেন, ‘আমরা কাজের যথাযথ তদারকি করছি। নিম্নমানের কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। যে সব জায়গায় পিচ ঢালাই উঠেগেছে তা পুনরায় রিপিয়ারিং করা হবে।’