রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি:-মোঃমহাজামিল
রাজশাহীতে এবার আলু চাষের শুরুতেই বীজ ও সারের সংকটে দিশেহারা হয়ে পড়েন আলু চাষিরা। তবে শেষ পর্যন্ত সষ্কট কাটিয়ে চাষকৃত আলুর পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। এখন আলু গাছের বয়স ২০ থেকে ২৫ দিন। এবছর তাপমাত্রা কমে প্রচন্ড ঠান্ডা পড়লেও ঘনকুয়াশা নেই। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেখা মিলছে রোদের। ফলে এবার রাজশাহীতে আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভবনা দেখছেন আলু চাষি কৃষকেতরা।
গত পুরো বছর জুড়েই আলুর দাম বৃদ্ধিতে এ বছর ব্যাপক হারে আলু চাষ করেছেন কৃষকেরা।এদিকে বিগত বছর গুলোতে এ সময়ে তীব্র শীত ও ঘনকুয়াশার কারনে বিস্তীর্ণ এলাকার আলুখেতে মারাত্নক ‘নাভিধসাথ(লেট বাইট) ও কান্ড পঁচা (¯ট্যামরড) রোগের প্রকোপে আলুর মারাত্নক ক্ষতি হলেও এবার এখন পযর্ন্ত খেত রয়েছে রোগ মুক্ত ও নিরাপদ।রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে রাজশাহী জেলায় ৩৫ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়ে ছিল। তবে চারদিকে আলু চাষের হিড়িক পড়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত আরও ৩ হাজার হেক্টর জমিতে বেশি আলু চাষ হয়েছে। প্রাকৃতিক পরিবেশ ও আবহাওয়া অনুকূল থাকলে এই পরিমাণ জমি থেকে রাজশাহীতে প্রায় সাড়ে ১১ লাখ টন আলু উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা পূর্ণ নির্ধারণ করা হয়েছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় আলু ফলনের এ লক্ষ্যমাত্রা সর্বোচ।
শনিবার (৪জানুয়ারি) সকালে সরেজমিনে আলুর মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, চাষিরা আলুর পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন। এখন প্রায় মাঠেই আলু গাছের বয়স ২০ থেকে ২৫ দিন। এখন পর্যন্ত নাভিধসা ও কান্ড পঁচা রোগ নেই। চাষিরা যে যার মত সেচ নিড়ানী বালাইনাশক দিয়ে গাছে পরিচর্যা করছেন।
মোহনপুর থানার কাজী ভাতুড়িয়া গ্রামের চাষি মোঃসাইফুল ইসলাম(সহকারী কাজী) বলেন , আলু চাষ আসলে আবহাওয়ার ওপর নির্ভরশীল। তীব্র শীত পড়লে ভাল হয়। কিন্তু ঘনকুয়াশা ও শিশিরপাত হলে আলুর মারাত্নক ক্ষতি হয়। অতিরিক্ত শিশিরপাত হলে আলুর কান্ডপঁচা রোগ দেখা দেয়। তবে এখন পর্যন্ত আলুর খেতে রোগ বালাই নাই। তিনি আরো বলেন, এবার সার, বীজ, জমি ভাড়া ও কীটনাশক এবং বিশেষ করে শ্রমিকের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবারে প্রতি বিঘা আলু চাষে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা বাড়তি গুনতে হয়েছে । আলু চাষের ভরা মৌসুমে বিভিন্ন বাণিজ্যিক কোম্পানি, ডিলার, বীজ বিক্রেতা ও হিমাগার মালিকরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করেন।
এ বিষয়ে মোহনপুর উপজেলার কৃষি অফিসার কামরুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে আছে। সকল মাঠে আলুর গাছের পরিপক্কতা দেখে ভাল মনে হচ্ছে। রোগ বালাই দেখা দিলে নিজ নিজ কৃষি অফিসে কৃষকদের পরামর্শ নেওয়ার জন্য বলেন এ কৃষি কর্মকর্তা। রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোছা. উম্মে সালমা জানান, আমরা শুরুতেই চাষিদের পরামর্শ দিয়ে ছিলাম তারা যেন উ”চফলনশীল জাতের আলু আবাদ করেন। এতে আলুর ফলনটা ভাল হবে। চাষিরাও এবার উ”চফলনশীল জাতের আলুর চাষ করেছেন। মাঠে মাঠে আলুর খেত ভাল রয়েছে। চাষিরাও পরিচর্যা শুরু করছেন। এখন পর্যন্ত কোথাও আলুর খেতে রোগ বালাই হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। তবে জানুয়ারি মাসে বৈরী আবহাওয়া থাকে। এ সময় চাষিদের সর্তক থাকতে হবে।